MRP : 75 0.00% OFF
Discounted Price : 75
Availability: In Stock
ইতিহাস-নগরী হায়দ্রাবাদ। বিজ্ঞানী গোপীনাথ মগ্ন আশ্চর্য এক আবিষ্কারে। হঠাৎ শিষ্য নাগার্জুন নিয়ে আসে ইকবালকে। শুধুই কি কৌতূহল? আমেরিকান বিজ্ঞানী বন্ধু জন ফোন করেন একই সময়ে ওই শহরে ভ্রমণরত জগুমামাকে.... গোপীনাথ নিখোঁজ! রক্তে ভেসে যায় ল্যাবরেটরি । মৃতদেহ লোপাট!...
জগুমামা গবেষণা করছেন রাজস্থানের থর মরুভূমিতে। হঠাৎ ধেয়ে এল অসংখ্য ভয়াল কাঁকড়া বিছে!...দীঘায় আমন্ত্রণ বিজ্ঞানী বন্ধুর।... তারপরেই বন্দি।...কলকাতায় মার্ডার। নৃশংস ! দুই ভাই অমিত আর সুমিত। খুন হল কে? প্রশ্ন, প্রশ্ন আর প্রশ্ন। রহস্য আর রহস্য। বিশ্ববিশ্রুত বিজ্ঞানী জণ্ডমামা আর ভাগ্নে টুকলু। সঙ্গী অনন্ত সরখেল। এঁরা ইতিমধ্যেই জনপ্রিয় কিশোর জগতে। তাঁদের বিভিন্ন সময়ের পাঁচ-পাঁচটি রহস্য অ্যাডভেঞ্চার 'রক্তরহস্য', 'জীবন্ত মাটি', 'বিনা মেঘে বজ্রাঘাত', 'ইনভেস্টিগেট' এবং 'মাটিতে মৃত্যু' উঠে এসেছে এই বইয়ে।
‘জণ্ডমামা'র ভক্ত-বন্ধুরা যাতে হোঁচট না খায়, তাই দু-এক কথা বলা দরকার। এই বইয়ে রয়েছে বিজ্ঞানী জগুমামার প্রথম গল্প 'জীবন্ত মাটি'। প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালের ছোটদের বিজ্ঞান পত্রিকার শারদ সংখ্যায়। রয়েছে সর্বশেষ সম্পূর্ণ উপন্যাস রিক্তরহস্যও। আর রয়েছে ছোট-বড় আরও তিনটি কাহিনি, বিভিন্ন সময়ে লেখা। তাই কোনও গল্পে টুকলু উচ্চমাধ্যমিক দিচ্ছে, কোথাও ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে, কোথাও চাকরি করছে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল এদিক-ওদিক। জণ্ডমামার গুণগ্রাহীদের
কথা ভেবেই জুড়ে দিলাম দু-মলাটের মধ্যে।
৬ই জানুয়ারি ২০০৬ কলকাতা ৭০০ ০০৯
লেখক পরিচিতি ঃ
জন্ম ৩০ অক্টোবর ১৯৫৮। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম. এসসি। রহস্য, কল্পবিজ্ঞান এবং ইতিহাস-নির্ভর সাহিত্যে ইতিমধ্যেই পরিচিত। কিশোর ভারতী, নবকল্লোল, শুকতারা, আজকাল, প্রতিদিন, শারদীয়া বর্তমান, মাতৃশক্তি, পুরশ্রী প্রভৃতি পত্রিকায় প্রচুর গল্প লিখেছেন।
প্রকাশিত বই—জণ্ডমামা রহস্য সমগ্র ১,২,৩ ও ৪, এখনও গায়ে কাঁটা দেয়, প্রথম সূর্য শশাঙ্ক, বড়দের বারো, শ্রীমান বিচ্ছু, সাবধান! সাসপেন্স!, তুমি পিতামহ, গোপন প্রেমের গল্প, বিষাক্ত রাত, মৃত্যুকে আমি দেখেছি, ভৌতিক অলৌকিক, অসি বাজে ঝানঝান, আজও রোমাঞ্চকর প্রভৃতি। সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে 'সেরা সমগ্র কিশোর ভারতী' উল্লেখযোগ্য। ২৪ বছর কিশোর ভারতী পত্রিকার প্রধান সম্পাদক। ২০০৭ সালে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে সম্মানিত। এ ছাড়াও পেয়েছেন সরকারি, বেসরকারি নানা সম্মান ও পুরস্কার।
প্রচ্ছদ সৌরীশ মিত্র
Author: Tridib Kumar Chattopadhyay
Language: Bengali
Pages: 104
Publisher: Patra Bharati
গো পীনাথ ঘড়ি দেখলেন। সাড়ে ছ'টা বাজে। আশ্চর্য! নাগার্জুন এখনও এল না। কী হল? শরীর খারাপ? ও তো ভীষণ পাংচুয়াল, ঠিক তাঁরই মতো। খুব ভালো করেই জানে, আজকের দিনটা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ। কাল প্রায় শিখরের কাছে পৌঁছে গেছেন। আজ রেজাল্ট এবং অবজারভেশন।
তার পরে আসল কাজ। মোক্ষম কাজ। এভারেস্টের মাথায় পতাকা পোঁতা। সেটা সম্ভব হলে যে কী অবস্থা হবে! ভাবতেই গোপীনাথের শরীরে কাঁটা দিল। কৃষ্ণাপ্পা বারদুয়েক উকি দিয়ে গেছে। গোপীনাথ হাত তুলে অপেক্ষা
করতে বলেছেন।
প্রায় বছরদুয়েক ধরে একই রুটিন। ঘড়ির কাঁটা ধরে নাগার্জুন ভোর সাড়ে পাঁচটার মধ্যে ঢুকে পড়ে। গুরু-শিষ্য একসঙ্গে বসে প্রাতঃরাশ সারেন। সেই সময় গবেষণা নিয়ে নিভৃত আলাপ-আলোচনাও হয়। ঘড়ির কাঁটা ছ'টা স্পর্শ করার আগেই দুজনে সাজগোজ করে ঢুকে পড়েন ল্যাবরেটরিতে। গবেষণার অন্য জগৎ। একটানা দুজনের কাজ চলে বেলা একটা পর্যন্ত। একঘণ্টার লাঞ্চ ব্রেক। ফের গবেষণা, সাতটা-সাড়ে সাতটা বেজে যায়। কৃষ্ণাপ্পাকে বলা আছে, ল্যাবরেটরিতে দুজনে ঢোকার পর 'ডু নট ডিস্টার্ব'। বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন। কে কে ফোন করছেন, সেটা ও অবশ্য টুকে রাখে।
বাইরে গাড়ির শব্দ। গোপীনাথ উঠে দাঁড়ালেন। জানলা দিয়ে দেখলেন, একটা ঝাঁ-চকচকে লাল কোয়ালিস এসে থেমেছে। কে আবার এল সাতসকালে? নাগার্জুনের তো স্কুটার। তবে কি ওর বাড়ির কেউ? খবর আছে? তাহলে তো ফোনে জানালেই পারত।
ভাবতে-ভাবতেই অবাক হলেন গোপীনাথ। দরজা খুলে নেমে এল নাগার্জুন নিজেই। ড্রাইভারের দিক থেকে অন্য একটি ছেলে। স্মার্ট, হ্যান্ডসাম্ চেহারা। রিমোট দিয়ে গাড়ি লক করল। দুজনে বাড়ির দিকেই এগিয়ে এল। গোপীনাথের কপালে ভাঁজ পড়েছে। গলা তুলে বললেন, কৃষ্ণ, ব্রেকফাস্ট তিনজনের।
সার, ইকবাল আমার স্কুলের বন্ধু। নাগার্জুন স্যারের মুখ পড়ে ফেলেছে। কিছুটা সঙ্কুচিতভাবে বলল, ইকবাল কাশিম। আমাদের দু-চারটে বাড়ির পরেই ওদের বাড়ি। পার্ল-এর ফ্যামিলি বিজনেস। আপনার সঙ্গে আলাপ করতে চাইছিল। অনেকদিন ধরে। সকালে ছাড়া তো সময় নেই। তাই—।
বলেছিল, পাচটার মধ্যে আমায় বাড়ি থেকে তুলবে। ওর জন্যেই দেরি হয়ে গেল সার। সরি সার।
–না-না, অল রাইট। একদিন হতেই পারে।... বোসো, বোসো। ইকবাল এসে গোপীনাথের হাঁটু ছুঁয়ে কদমবুসি করল। সামনের সোফায়
বসে বলল,—নাগের মুখে সবসময় আপনার কথা। একটা রিসার্চ নিয়ে এতদিন পড়ে আছেন! আলাপ করতে এলাম সার। কৃষ্ণাপ্পা ব্রেকফাস্ট সাজিয়ে দিয়ে গেছে। ইডলি, ওমলেট, আপেল। টি-
পটে চা।
নাও, শুরু করো।—গোপীনাথ অল্প হাসলেন। ইডলিতে কামড় দিয়ে বললেন, বিজ্ঞানীদের কাজটাই এ-রকম। যেটা ধরবে, শেষ দেখে ছাড়বে। তাতেও যে সবসময় জেতা যাবে, তার কোনও সিওরিটি নেই। হয়তো শেষ ধাপে পৌঁছে দেখলে, তোমার পুরো ক্যাল্কুলেশন ভুল। তখন হয় নতুন করে জিরো থেকে শুরু করো, নতুবা লিভ ইট। কোনও ধরাবাঁধা নিয়ম নেই ইকবাল ।
জি সার ।— ইকবাল বলল, আমি তো নাগকে দেখে অবাক হয়ে যেতাম। কীসের নেশায় ও লড়ে যাচ্ছে? শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা একদিনও বাদ নেই, সেই ভোরে বেরিয়ে যাচ্ছে। ফিরছে রাতে।
রাইট।—গোপীনাথ বললেন, আয়াম প্রাউড অব হিম। আজকালকার ছেলেদের মধ্যে এই টেনাসিটি দেখা যায় না।...বলো, কী জানতে চাও। —আপনাদের এই রিসার্চ কি সাকসেসফুল হবে সার?
—তুমি কী জানো আমাদের রিসার্চের সম্পর্কে?
—একটু-একটু শুনেছি নাগের কাছ থেকে। সামথিং লাইক ক্রিয়েটিং লাইফ, মানে নতুন জীবন সৃষ্টি—।
গোপীনাথ চকিতে তাকালেন নাগার্জুনের দিকে। নাগার্জুন মুখ নামিয়ে নিলু। গোপীনাথ কেঁপে উঠলেন। সর্বনাশ! এ কী করল নাগার্জুন? ও তো ভালো করেই জানে, তাঁদের গবেষণা কতটা গোপনীয় ।
ইকবাল যথেষ্ট বুদ্ধিমান। তাড়াতাড়ি বলে উঠল,—সার, একটা কথা বলব? নাগের কোনও দোষ নেই। আমিই রোজ ওকে খোঁচাতাম। স্রেফ কৌতূহলে। পরশু রাতে আড্ডা দিতে-দিতে মুখ ফসকে—আপনি নিশ্চিন্ত থাকুন সার, এ-কথা চতুর্থ লোক জানবে না। আমি কথা দিচ্ছি সার।
গোপীনাথ স্থিরচোখে তাকিয়ে আছেন ইকবালের দিকে। কয়েকমুহূর্ত পরে....
© Copyright 2025 BookzoneCollegeStreet | All Rights Reserved. Product of INDIA, Made with ♥ in India