MRP : 125 0.00% OFF
Discounted Price : 125
Availability: In Stock
লক্ষ্ণৌয়ের নবাব-পরিবারের বংশধর ডাক্তার ইউনুস আলি। তাঁদের পারিবারিক সম্পদ এক সুপ্রাচীন আরবি পুথি। সযত্নে রক্ষিত আছে। কিন্তু কিছুদিন হল সেই পুথি নিয়ে কেউ টানাটানি করছে! পুথির মধ্যে পাওয়া গেল এক অদ্ভুত পিকচার পোস্টকার্ড। কে পাঠাল ? কে রাখল ?.... বিপত্নীক বিজ্ঞানী ড. অজিত পালচৌধুরীকে পাওয়া গেল তার বেলেঘাটার ফ্ল্যাটে। মৃত। মৃত্যুর আগে তিনি প্রবল যন্ত্রণা পেয়েছেন। পোস্টমর্টেম জানাল, সেরিব্রাল অ্যাটাক। মেয়ে বলল, 'না, খুন! বাবা যুগান্তকারী গবেষণা করছিলেন।
জগুমামা-টুকলুর এই বইয়ে দুটি রহস্য উপন্যাস। একটির পটভূমি ইতিহাসের শহরে লক্ষ্ণৌ। অন্যটির হিমালয়ের কোলে পাহাড়-জঙ্গলের সিকিম। সঙ্গে মিশেছে রহস্য-রোমাঞ্চে শিহরিত বিজ্ঞান। শুরু করলে শেষ করতেই হবে।
Author: Tridib Kumar Chattopadhyay
Language: Bengali
Pages: 112
Publisher: Patra Bharati
রবিবারের বিকেলে দমকা হাওয়ার মতো হঠাৎ এসে হাজির হলেন অনন্ত সরখেল। বাইরে গাড়ির গর্জন। অতঃপর সিঁড়িতে পায়ের শব্দ এবং উপর্যুপরি কলিংবেল। চোখেমুখে বিশ্বজয়ের তৃপ্ত। ধপ করে সোফায় বসে বললেন, – দিদিকে দিয়ে এলুম। আসছে। খেয়ে
দ্যাখো। এ জিনিস অন্য কোথাও পাবে না। তেওয়ারি থেকে গরম-গরম ভাজিয়ে আনলুম। তারপর এদিক-ওদিকে তাকিয়ে, স্যার কোথায় ?
-ঘরে।
—আশ্চর্য ছেলে। খবর দাও। স্যারের সঙ্গে আলাপ করাতে নিয়ে এলুম ডাক্তারবাবুকে।... আরে ডাক্তারসায়েব। দাঁড়িয়ে আছেন কেন? বসুন! এ আমার নিজের বাড়ি।
সঙ্গের ভদ্রলোক এতক্ষণ একটু অস্বস্তি নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। বসলেন। সুদর্শন অভিজাত চেহারা। ক্লিন শেভড়। রিমলেস সোনালি চশমা। সাদা সাফারি স্যুট। বয়েস ষাটের আশেপাশে। অণ্ডমামা ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছেন। বললেন, – অনন্তবাবু। কেমন -
আছেন?
—আর স্যার দেখা হলে কেমন আছেন'! বুড়োটা বাঁচল কি মরল,
খবরও নেন না। কলকাতায় এলে জানতে পারি না। —সবে কাল রাতে এসেছি। -সে তো স্যার, দিদির কাছে শুনেছি। টুকলুটা এত গাছ-ইয়ে হয়ে গেছে
স্যার, কিচ্ছু বলে না! মাঝে ফোন করেছিলুম। জিগ্যেস করলুম, 'স্যারের কোনও খবর আছে?' জবাব দিল, 'ভালো আছেন।' বুঝুন! একবারও বলল না, আপনার কলকাতায় আসার কোনও প্রোগ্রাম আছে কিনা।
—খামোকা আপনি ওর ওপর রাগ করছেন। আমার রিসার্চ চলছিল লেটেস্ট 'অ্যান্টি এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস' নিয়ে। বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করার যন্ত্র! আমরা যতই নিষ্ক্রিয় করার যন্ত্র আবিষ্কার করছি, সন্ত্রাসবাদীরা ফাঁকফোকর খুঁজে বের করছে। পরশু রাতে কাজটা শেষ হয়েছে। কাল বিকেলের ফ্লাইটে চলে এসেছি। আসলে এধরনের গবেষণায়, করে শেষ হবে কোনও নির্দিষ্ট তারিখ থাকে না যে!
মনেকরবেন না স্যার, আপনি একবারেধ —কিছু মনে করবেন না স্যার, আপনি একেবারে ধৃতরাষ্ট্র। টুকলুর
কোনও দোষই দেখেন না।
জণ্ডমামা হেসে ফেললেন। বললেন, -- ধৃতরাষ্ট্র হব কী করে মশাই! আমি হলাম ওর মামা।
তাহলে স্যার কিছু মনে করবেন না, আপনি হলেন গিয়ে সাক্ষাৎ শকু এঃ য্যাঃ!-তাড়াতাড়ি জিভ কাটলেন অনন্তবাবু। বললেন, যায়ে, যাগে, আপনাকে বলা বেকার। তার চেয়ে আমার এই বন্ধুর সঙ্গে সবার আলাপ করিয়ে দিই। ডাক্তার ইউনুস আলি। পার্ক সার্কাসে থাকেন। ওই এলাকার সবাই একডাকে চেনে। ডাক্তারসায়েব, টুকলু আর স্যারকে তো চিনেই ফেলেছেন। মামা-ভাগ্নে। ওই যে দিদি। ইনি জামাইবাবু।... পিকলু কোথায়?
বেরিয়েছে।—মা টেবিলে সিঙাড়ার প্লেট দুটো রাখতে রাখতে বললেন। সবাই নমস্কার করলেন। আসুন, গরম থাকতে-থাকতে সদ্ব্যবহার করা যাক্।—জগুমামা একখানা
সিঙাড়া তুলে মুখে দিলেন। তারপর বললেন, – আপনি কি জেনারেল মেডিসিন ?
জি।—ডাক্তার বললেন, –এম. ডি. করেছি জেনারেল মেডিসিনে। এফ.আর.সি.এস.-এ অবশ্য ই.এন.টি. স্পেশালাইজেশন ছিল। তবে প্র্যাকটিস করি না।
—স্যার, ডাক্তারসায়েবের আরেকটা ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড আছে। সেই
বিষয়ে কথা বলতেই এসেছেন। আপনার পরামর্শ নিতে চান।
জগুমামা জিজ্ঞাসু চোখে তাকালেন।
-ওরা হলেন লক্ষ্ণৌর নবাবের বংশধর। আচ্ছা!—আমরা সবাই সোজা হয়ে বসলাম।
জি, ডক্টর মুখার্জি।—সলজ্জ হেসে ডাক্তার বললেন,—আমরা আওধের শেষ নবাব ওয়াজেদ আলি শাহের বংশধর। ১৮৫৬ সালে ব্রিটিশ যখন নবাবের ক্ষমতা কেড়ে নিল, তাকে এনে তুলল মেটিয়াবুরুজে। শুধু তাকে নয়, তার সঙ্গে এল নবাবের জ্ঞাতিগুষ্টি সবাই। তারপর যখন সিপাই মিউটিনি হল ১৮৫৭- য়, ব্রিটিশরা ধরে নিল, নবাব এতে গোপনে মদত দিয়েছেন। বন্দি করা হল ফোর্ট উইলিয়ামে। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর জ্ঞাতিগুষ্টি অবশ্য মেটিয়াবুরুজেই ছিল ।...
একমিনিট ডক্টর আলি । —জগুমামা বললেন, টুকলু, বল্ তো কোথায় আছে ওয়াজেদ আলি শাহের কথা? সেই বিখ্যাত ডায়ালগ—'যব ছৌড় চলে লখনৌ নগরী....'।
© Copyright 2025 BookzoneCollegeStreet | All Rights Reserved. Product of INDIA, Made with ♥ in India